দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্য: দুর্ঘটনা, রোগ, প্রতিকার এবং প্রতিরোধ
দুর্ঘটনায় দাঁত উপড়ে গেলে করণীয়
পেনিক তৈরি না করে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
সবসময় দাঁতের মুকুটে বা ক্রাউনে স্পর্শ করতে হবে, দাঁতের গোড়া রুটে কখনো স্পর্শ করা যাবে না।
দাঁত পরিস্কার করার জন্য দুধ বা স্যালাইন পানি ব্যবহার করতে হবে।
যদি সম্ভব হয় দাঁত সকেটে প্রবেশ করাতে হবে।
যদি দাঁত সকেটে প্রবেশ করানো সম্ভব না হয় তাহলে দুধ, মুখের লালা, অথবা স্যলাইন পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পানি বা শুকনো যায়গায় রাখা যাবে না।
উপড়ে যাওয়া দাঁতের যথাযথ চিকিৎসার জন্য আধঘন্টা থেকে ১ ঘন্টার মধ্যে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
মাড়ি ফোলা রোগ: উপসর্গ, লক্ষণ, কারণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধ
প্রধান কারণ
জিঞ্জিভাইটিস (মাড়ির উপরিভাগের ইনফ্লেমেশন)
পেরিওডোন্টাইটিস (মাড়ির ভিতরের ইনফ্লেমেশন)
উপসর্গ
মাড়ি লাল হয়ে যাওয়া
মাড়ির ব্যথা
মাড়িতে ঘা
মাড়িতে আলসার
মাড়ি দিয়ে রক্তক্ষরণ
লক্ষণ
লাল বা কালচে মাড়ি
কোমলতা বা ব্যথা
মাড়ি ফুলে যাওয়া বা বর্ধিত হওয়া
রক্তক্ষরণ
দুর্গন্ধ
পিছিয়ে যাওয়া মাড়ি
আলগা দাঁত
দাঁত এবং মাড়ির মধ্যে পুঁজ
মুখে ধাতব স্বাদ
চিবানোর সময় অস্বস্তি
কারণ
দুর্বল দাঁতের স্বাস্থ্যবিধি
পেরিওডন্টাল রোগ
Gingivitis
মাড়ি লাল এবং নরম হয়ে যাওয়া
রক্তপাত
দুর্গন্ধ
Periodontitis
দাঁত লম্বা দেখায়
দাঁত নড়ে
মাড়ি সরে যায়
ব্যথা করে
দাঁত ছড়িয়ে যায়
শারীরিক রোগ ও হরমোন
চিকিৎসা
স্কেলিং এবং রুট প্ল্যানিং
জটিল ক্ষেত্রে পেরিওডন্টাল চিকিৎসা অব্যাহত
প্রতিরোধ
প্রতিদিন ২ বার ব্রাশ ও ১ বার ফ্লস
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ
প্রচুর পানি পান
মানসিক চাপ কমানো
নিয়মিত চেকআপ
ঘরোয়া প্রতিকার
লবণ পানি: দিনে ২–৩ বার কুলি
গরম ও ঠান্ডা কম্প্রেস: দিনে ২–৩ বার প্রয়োগ
মাড়ির রোগ (পেরিওডন্টাইটিস): লক্ষণ ও উপসর্গ
মুখে দুর্গন্ধ
দাঁতে কামড়ে ব্যাথা
রক্তপাত
মাড়ি ফুলে যাওয়া
দাঁত ফাঁকা ও নড়বড়ে
মাড়ি সরে যাওয়া
মাড়িতে পুঁজ জমা
আক্কেল দাঁতের মাড়ির সংক্রমণ (পেরিকরোনাইটিস)
পরিচিতি
সাধারণত ১৮–২৫ বছর বয়সে ঘটে
নিচের চোয়ালের দাঁত আংশিক উঠলে বেশি হয়
লক্ষণ
চাপা ব্যথা
ব্যথা বাড়ে খাবার বা ব্রাশ করার সময়
দুর্গন্ধ
মুখ ফুলে যাওয়া
হা করতে কষ্ট
জ্বর ও দুর্বলতা
প্রতিকার ও প্রতিরোধ
গরম লবণ পানি দিয়ে কুলি
মুখ পরিষ্কার রাখা
ডাক্তার প্রয়োজন হলে:
এন্টিবায়োটিক
টিস্যু পরিষ্কার ও পুঁজ বের করা
এক্স-রে করে ব্যবস্থা নেওয়া
জটিলতা
সেলুলাইটিস (মুখ ও গলার ইনফেকশন)
হাড়ে অসটিওমাইলাইটিস
পাশের দাঁত নষ্ট হতে পারে
অ্যাপথাস আলসার বা মুখে ঘা
লক্ষণ
মাইনর আলসার: ছোট, হালকা হলুদ
লাল হয়ে পরে সাদা হয়
গোলাকৃতি ঘা
খাওয়ার সময় জ্বালাপোড়া
ছোঁয়াচে নয়
কারণ
দাঁতের ভুল যত্ন
পাথর জমে যাওয়ায়
ঘুম কম ও মানসিক চাপ
হরমোন পরিবর্তন
মুখে কামড় বা আঘাত
ধারালো দাঁতের অংশ
ভিটামিন বি১২, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড ঘাটতি
জর্দা/সিগারেট/পাতা
উপদেশ
ঘুম ও বিশ্রাম
ঝাল খাবার পরিহার
কুসুম গরম লবণ পানি
ভিটামিন বি১২ ও আয়রন গ্রহণ
সিগারেট-জর্দা বর্জন
ডেন্টাল চিকিৎসকের পরামর্শ
প্রতিরোধ
বছরে ১ বার স্কেলিং
নিয়মিত ব্রাশ ও ফ্লস
ধারালো দাঁত মসৃণ করা
গরম খাবার পরিহার
চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ নয়
দাঁত নড়ে যাওয়ার কারণ ও প্রতিকার
কারণ
দাঁতের প্রদাহ
আঘাত বা শক্ত কিছু কামড়
ব্রুকসিজম বা দাঁত ঘষার অভ্যাস
হাড় ক্ষয় ও ভিটামিন ডি ঘাটতি
হরমোন পরিবর্তন (গর্ভকালীন/মেনোপজ)
ভুল অর্থোডন্টিক চিকিৎসা
ক্রনিক রোগ ও ওষুধ
ধূমপান ও মদ
প্রতিকার
সঠিক দাঁতের পরিচর্যা
চিনিমুক্ত স্বাস্থ্যকর খাদ্য
মুখ শুষ্ক হলে ইন্টারডেন্টাল ব্রাশ
স্কেলিং ও প্রয়োজনে রুট প্ল্যানিং
দাঁত ফেলার পর কৃত্রিম দাঁতের সংযোজন
বছরে অন্তত একবার ডেন্টাল চেকআপ
ডেন্টাল ইমপ্লান্টের সুস্থতায় মুখের স্বাস্থ্যের গুরুত্ব
টিপস
নিয়মিত ব্রাশ ও ফ্লস করুন
দিনে ২ বার নরম ব্রাশ ও ফ্লুরাইড টুথপেস্ট
রাতে ননওয়াক্স ফ্লস
ধূমপান ও মদ থেকে বিরত থাকুন
রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়, দাগ পড়ে, সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে
সুষম খাবার গ্রহণ করুন
দুধ, মাছ, শাকসবজি, বাদাম, ফল, পানি
চিনিযুক্ত ও অ্যাসিডিক খাবার এড়ান
যেমন খেজুর, কিসমিস ইত্যাদি
বছরে ২ বার ডেন্টিস্টের চেকআপ নিন
স্কেলিং ও এক্স-রে করুন
খেলাধুলায় মাউথগার্ড ব্যবহার করুন
অস্বস্তি বা পরিবর্তন হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন
উপসংহার
দাঁত ও মাড়ির সুস্থতা বজায় রাখতে চাই নিয়মিত পরিচর্যা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, এবং প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে ছোট সমস্যাও বড় জটিলতায় রূপ নিতে পারে।
জনশ্রুতি নয়, শুনুন একজন বিশেষজ্ঞ ডেন্টিস্টের বাস্তব পরামর্শ। আজই যোগাযোগ করুন Dr. Anupam Podder-এর সাথে — আপনার সুস্থ হাসির জন্য।
সঠিক তথ্যেই থাকুক দাঁতের যত্ন!
